কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধারের চাহিদা নেই ব্যাংকগুলোর
অনলাইনডেক্স:
বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী সুদহার কমানোর পরও দীর্ঘদিন ধরে রেপো থেকে ধার নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না কোনো ব্যাংক। চাহিদা না থাকার কারণেই মূলত এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঋণ দেওয়ার মতো উপযুক্ত জায়গা না পেয়ে উল্টো তুলনামূলক কম সুদের রিভার্স রেপোতে টাকা খাটানোর সুযোগ খুঁজছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী সুদের লেনদেন একপ্রকার নিষ্ক্রিয় রয়েছে। এমন ক্ষেত্রে সাধারণত বাজারে অতিমাত্রায় উদ্বৃত্ত তারল্য জমে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রিভার্স রেপোর তুলনায় আরও কম সুদে টাকা তুলতে ৭ ও ১৫ দিন মেয়াদি বিল চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো স্বল্প সময়ের জন্য যে ধার নেয়, তাকে ‘রেপো’ বলে। আর ব্যাংক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধার নিলে তাকে বলা হয় ‘রিভার্স রেপো’। গত জানুয়ারিতে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে দুটি ক্ষেত্রেই দশমিক ৫০ শতাংশ সুদহার কমিয়ে রেপোতে ৬ দশমিক ৭৫ এবং রিভার্স রেপোতে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। তবে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দেওয়া ও নীতিনির্ধারণী সুদহার বাজারভিত্তিক করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কার্যকরী অবস্থা তৈরি হয়নি। কেননা, বাজারে চাহিদা না থাকায় সুদহার কমানোর পরও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা না নিয়ে উল্টো প্রতিদিনই রাখতে আসছে ব্যাংকগুলো। সাধারণভাবে ব্যাংকগুলো নগদ টাকার টানাটানিতে থাকলে রেপোর মাধ্যমে ধার নেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, বাজারে বেশি তারল্য থাকলে অনেক ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বেড়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে বিভিন্ন উপায়ে সময়ে-সময়ে বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়। স্বল্প মেয়াদে রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাজার থেকে উদ্বৃত্ত টাকা তোলে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে রিভার্স রেপোর তুলনায় অনেক কম সুদে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে টাকা তোলার সুযোগ থাকায় এখন নতুন করে ৩০ দিন মেয়াদি বিলের পাশাপাশি ৭ ও ১৫ দিন মেয়াদি বিল চালু করা হয়েছে। গত মার্চে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে গড়ে ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ সুদে নিলামে অংশ নিয়ে টাকা রেখেছে বিভিন্ন ব্যাংক।
অন্যদিকে, ব্যাংকগুলো নগদ অর্থের টানাটানিতে থাকলে টাকা না রাখতে এসে উল্টো প্রতিদিনই রেপোর মাধ্যমে ধার নিয়ে থাকে। তবে ব্যাংকগুলোর কাছে এখন পর্যাপ্ত নগদ অর্থ থাকায় তাও আর নিচ্ছে না কোনো ব্যাংক। রেপো থেকে সর্বশেষ গত ১২ জানুয়ারি ১৭২ কোটি টাকা নিয়েছিল একটি ব্যাংক। এর পর আর কোনো ব্যাংক টাকা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আসেনি। এখন কোনো ব্যাংকের স্বল্প সময়ের জন্য নগদ টাকার প্রয়োজন হলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার (কলমানি) থেকে চাহিদা মেটাচ্ছে। গত মার্চে কলমানিতে গড়ে ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ সুদে লেনদেন হয়েছে। রেপোতে নির্ধারিত সুদের তুলনায় যা প্রায় অর্ধেক। –
সুত্র:সমকাল